কওম গোষ্ঠীর সংবর্ধনায় পিছিয়ে গেলে জেএসসি পরীক্ষা!

সানাউল হকঃ  


বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস অনুসারেই সংলাপ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার তেমন কিছুই নেই। আর এবার আরও নেই, কারণ যারা সংলাপ করছেন তাদের মধ্যে শক্তির কোনো ভারসাম্য নেই। সংলাপের একদল ক্ষমতায় আছে ১০ বছর, আরেক দলের নেতারা হামলা-মামলায় বিপর্যস্ত বা অবস্থান করতে হচ্ছে বিদেশে। এমন অসম শক্তির মধ্যে সংলাপে তেমন কিছু পাওয়ার নেই। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আসিফ নজরুল গতকাল এসব কথা বলেন। আসিফ নজরুল বলেন, ঐক্যফ্রন্টের মূল দাবিগুলোর মধ্যে একটি অংশ ছিল সংবিধানের মধ্যে, অন্য অংশ ছিল সংবিধানের বাইরে। সংবিধানের মধ্যেই থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ করার অধিকারের যে দাবি তা-ই তো পূরণ হয় না। সংবিধান কেন, বিশ্বের যে কোনো দেশের আইনের মধ্যে প্রাথমিক একটি অধিকার হলো সমাবেশ করার অধিকার, মিছিল-মিটিংয়ে হয়রানিমুক্ত আসা-যাওয়ার অধিকার। এটাই তো সরকার পালন করে না। 

আসিফ নজরুল বলেন, আজকে হেফাজত যখন প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে আসছে তখন পরীক্ষা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও এমন কিছু কি আছে, যে একটা সংবর্ধনার জন্য পরীক্ষা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এই হেফাজত যখন এর আগে সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করতে এসেছিল তখন তাদের পিটিয়ে, গুলি করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই হলো সরকারের চরিত্র। 

তিনি বলেন, সভা-সমাবেশের অধিকারের বিষয়েও সরকারের সঙ্গে সংলাপে অর্থবহ কিছুই অর্জিত হয় না। অন্যান্য বিষয় তো দূরের কথা। কেউ যদি অর্থবহ হয়েছে বলে মনে করে তারা আসলে সত্য কথা বলছে বলে আমার মনে হয় না। আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজপথে বড় সমাবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন ছাড়া কিছু অর্জিত হবে বলে আমার মনে হয় না। শুধু বিরোধী দলগুলো আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে অর্থবহ দাবি মানাতে পারবে। 

এ ছাড়া সরকারের কোনো দাবি মেনে নেওয়ার কারণ নেই। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের পাশাপাশি আরও অনেক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সরকার আসলে ঐক্যফ্রন্টকে আরও অনুল্লেখ্য করছে। এখন যদি আরও সংলাপের ব্যবস্থা হয়, তা আসলে সময় ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই হবে না। আসলে সংলাপে দলগুলোর অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের যেমন আগ্রহ ছিল, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। -
নবীনতর পূর্বতন