উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ৮ মাসের শাসনআমলে দারুণ সফলতা

        গত বছরের নভেম্বরে এএইচএম মাহফুজুর রহমান ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেছেন। এর পূর্বে উপজেলা নির্বাহী ল্লঅফিসার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ড. শহীদ হোসেন চৌধুরী। তিনিও যোগ্য ইউএনও হিসেবে উপজেলাবাসীর নিকট পরিচিত ছিলেন। তাঁর কর্মস্থল অন্যত্র হয়ে যাওয়ায় ফরিদগঞ্জে যোগদান করেন বর্তমান ইউএনও এএইচএম মাহফুজুর রহমান। বর্তমান ইউএনওর মাধ্যমে তথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসের মাধ্যমে বিগত ৮ মাসে উপজেলার নাগরিকদের মধ্যে সেবা নিয়েছে দিনে গড়ে ৫০ জন প্রায়। সে হিসেবে ৮ মাসে ৯ হাজারেরও অধিক উপজেলার নাগরিক সেবা পেয়েছে। এর মাঝে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে প্রবাসী, অসহায় ও হতদরিদ্র নাগরিক ব্যক্তিবর্গের প্রতি। সেবাগ্রহীতা ব্যক্তিবর্গের কথানুযায়ী অধিক সময় ধরে লেগে থাকা কোনো সমস্যা দূরীকরণে নির্বাহী অফিসারের নিঃস্বার্থ সহযোগিতা সত্যিই উপজেলাবাসীকে আর্থিক, মানসিক ভোগান্তি থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে।


        সেবাগ্রহীতা বিভিন্ন শ্রেণীর জনসাধারণের নিকট থেকে আরো জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচএম মাহফুজুর রহমান ফরিদগঞ্জে যোগদান করার পর থেকে নাগরিক সেবার মান যথাযথভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজ পেশার ওপর অবিচল থেকে ন্যায়দ- বজায় রেখে তিনি উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীর নাগরিক সমস্যা দূরীকরণের সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাঁর এ সঠিক দায়িত্ববোধ উপজেলাবাসীকে ভোগান্তি আর আর্থিকভাবে বাঁচিয়েছে। মাদক নির্মূল অভিযান, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ বন্ধে তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ঝামেলা মেটাতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য বলে ধারণা করছেন উপজেলার সুধীমহল।


        ইউএনও'র অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৮ মাসের কর্মকালে ফরিদগঞ্জে বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে ২৮টি। মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়শি অভিযান অব্যাহত রেখে এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১২টি। ইভটিজিং নিয়ে মামলা হয়েছে ৪টি। উক্ত অফিসে কর্মরত একজন কর্মচারী জানান, নির্বাহী অফিসার বরাবর বিগত ৮ মাসে যে হারে নাগরিক সেবা প্রদান করা হয়েছে তা পূর্বের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। এই অফিসে যে হারে লোকবল থাকার দরকার ছিলো বর্তমানে তা না থাকাতে অনেক ক্ষেত্রে ভালো কাজগুলোর সঠিক হিসেব রাখা হয়নি।


        উপজেলার অধিবাসী মোঃ হুমায়ুন কবির, কর্মক্ষেত্রে তার অবস্থান প্রবাসে। তিনি জানান, জমিসংক্রান্ত একটি বিষয়কে নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে সমস্যায় পড়েছিলাম। আমার জমির প্রয়োজনীয় কাগজত্রাদি সঠিক থাকা সত্ত্বেও আমার অধীনে আসেনি। এমতাবস্থায় আমার পরিচিত এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করলে সুফল পাওয়া যাবে। কথানুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে জানালে তিনি তৎক্ষণিক কাগজপত্রাদির ব্যবস্থা করে দেন।


        তাঁর অফিসে কর্মরত একজন কর্মচারী জানান, বর্তমান ইউএনও উপজেলাব্যাপী দুর্ঘটনার শিকার অনেক ব্যক্তিকে আর্থিক এবং খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের মানুরী গ্রামে ভয়াবহ অগি্নকা-ে কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা পুড়ে যায়। ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেন। তাঁর কার্যালয়ে অসহায় ও প্রবাসী নাগরিক সমস্যা দূরীকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার প্রতিটি নাগরিক তাঁর অফিসে কোনো ধরনের প্রতারণার শিকার যাতে না হতে হয় এ বিষয়ে কড়া সতর্কতা রয়েছে।


        উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচএম মাহফুজুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, বর্তমান সরকার যেহেতু শিক্ষা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচুর অর্থ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী প্রদান করছেন, সে সমীকরণে ফরিদগঞ্জ উপজেলাব্যাপী বহুসংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ডিডিজলাইজ্ড প্রযুক্তি দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নতুন-পুরাতন কয়েকটি স্কুলে আমরা শিক্ষা উপকরণসহ আনুষঙ্গিক খরচ দিয়ে আসছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে পুলিশ সুপারের সাথে একাত্মতা পোষণ করে ফরিদগঞ্জ উপজেলাবাসীকে নিয়ে কাজ করে যেতে চাই। বাল্যবিবাহ থেকে সমাজকে রক্ষার্থে সদা সর্বদা চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উপজেলাবাসীর সহযোগিতায় এ পর্যন্ত ২৮টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। একদিকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করি অন্যদিকে স্থান পরিবর্তন করে অন্য স্থানে অথবা শহরে-বন্দরে গিয়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়েটা সম্পন্ন করে ফেলে। বাল্যবিবাহ যাতে এক স্থান থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য স্থানে না সম্পন্ন করতে পারে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন খুব শীঘ্রই সরকারের মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। উপজেলা কমপ্লেঙ্ জামে মসজিদের ২য় তলার চলমান কাজে উপজেলা পরিষদের সহযোগিতা রয়েছে। চাঁদপুর জেলা ব্রান্ডিংয়ের আওতায় লোহাগড় মঠ এবং তার আশপাশ এলাকাজুড়ে পূর্ণ সংস্কারে আমাদের অফিস এবং উপজেলা পরিষদের যৌথ অবদান রয়েছে। এছাড়াও সরকারি তহবিল থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক বহু কাজ যেমন ব্রিজ, ছোটখাট কালভার্ট, রাস্তাসহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে। বিশেষ করে ১২নং ইউনিয়ন, ১১নং, ১নং, ১৫নং ও ১৬নং ইউনিয়নসহ আরো অনেক স্থানে।
নবীনতর পূর্বতন