সর্বনাসা শীতের প্রভাব শুধুমাত্র গরীবরাই উপভোগ করে!

 সানাউল হক:


গ্রাম বাংলার প্রচলীত একটা কথা রয়েছে, কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। ধনীদের জন্য শীত মৈসুমটা যে করেই হোক উপভোগ করার মত মাস। আর নিম্নবিত্ত তথা গরীবরা পৌষ মাসের তীব্র ঠান্ডা থেকে একটু উষ্ণতার জন্য চারিদিকে ছুটে বেড়ান।বসবাসের জায়গাটাও থাকে অনেকের কন কনে শীতের মাঝে মাটির উপর। আবার অনেকের জন্য মাথার উপর চাল চাউনিতো নেই। এই তীব্র শীত খোলা আকাশের নিচে থেকে কাটিয়ে দেন। যারা প্রায় ১২ মাস এসি রুমে ঠাণ্ডা অনুভূতিতেই দিন কাটান, তাদের কাছে এমন শীতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু দরিদ্র মানুষের জীবনে এ যেন বিষম বেদনা হয়ে আসে।

এছাড়াও পৌষ মাস এলেই যে শীত জেঁকে বসবে, তা কিন্তু নয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ফেথাইয়ের প্রভাবে শীত সবাইকেই জড়িয়ে বসে আছে। শীত হলেই বা কী? কাজ না করে তো বসে থাকার জো নেই! একটানা কাজে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে একটু খানি আগুনের পাশে বসা।বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ শীত মৌষুমে কষ্ট পেয়ে থাকে দক্ষিণ অঞ্চলে।সুর্য মামা আকাশের বুকে উঠুক বা না ‍উঠুক অসহায় নিম্ন পরিবারের লোকজন ঠিকই বের হয়ে যেতে হয় তাদের কর্মের সন্ধানে। ভোর বেলায় কন কনে শীতের মধ্যে দক্ষিণ অঞ্চলের তীব্র শীতের মধ্যেই অধিকাংশ পরিবারের লোকজন বের হয়ে যান কাজের খোজে দেশের এ পান্থ থেকে অন্য প্রান্থে।
বড়রা তো যেভাবেই হোক শীত সহ্য করে নিতে পারে, কিন্তু শিশুরা তো আর অনুভব করতে পারে না। যদিও পারে তা হচ্ছে কান্না। এ শীতের প্রভাবে অনেক অসহায় পরিবারের ছোট ছোট শিশুদের নানাবিধ রোগের জন্ম হয়। প্রয়োজনীয় উষ্ঞতা না পাওয়া, শরীলের যত্ন না নেয়ার কারণে শিশুদের ভয়ংকর রোগের প্রভাব ফেলে। নিম্ন ভিত্তিক পরিবারগুলো তো তাদের নিজেদের খাদ্য জোগান দিতেই হিমশিম খেতে হয়, তবে কখন আর তাদের আদরের নাড় ছেড়া ধনের ডাক্তারী চিকিৎসায় অর্ন্তভুক্ত করবেন।

শংস্লিষ্ট সংগঠনগুলো প্রাই বলে থাকেনে যে, এই শীতে অনেক পরিবার রয়েছে যারা খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন। গ্রামাঞ্চলে আছে অনেকেই মাটির উপর কোন রকমে কাপড় বিচিয়ে রাত্রী যাপন করে থাকেন। সমাজের ভিত্তবানরা যদি তাদের এ অসহনীয় শীতের ব্যপারে সকলের নিজ দায়িত্বে কাপড়, খাদ্য, চিকিৎসার মোটামোটি ব্যবস্থা করে দিতে, তবে মনে হয় এ সমাজ থেকে মানবতার জন্য দৃষ্টান্ত নজির হারিয়ে যেত না।
প্রকৃতির নিয়মেই শীত আসে, চলে যায়। কিন্তু কারো কারো জীবনে রেখে যায় নিজের শক্তিশালী চিহ্ন।


নবীনতর পূর্বতন