আত্মহত্যায় সমাধান নয় জেনেও কেন করছে? পরিবার, সমাজব্যবস্থাই পারে আত্মহত্যার প্রবনতা কমাতে

সানাউ হক:

সারা বিশ্বে যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে তার ৭৫ শতাংশ বা তিন-চতুর্থাংশই হয়ে থাকে নিম্ন বা মধ্য আয়ভুক্ত দেশগুলোতে। এই তালিকাতেই বাংলাদেশের স্থান দশ নম্বরে।আত্মহত্যার জন্য যে পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি সেগুলো হল কীটনাশক খাওয়া, ফাঁসিতে ঝোলা কিংবা আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার।সারা বিশ্বেই এই প্রবণতা একই রকম হলেও বাংলাদেশের বেলায় তা একটু ভিন্নরকম। যদিও বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে থেকে বের হয়ে উন্নত রাষ্ট্রে প্রদার্প্ন করেছে।তবে বাংলাদেশে অগ্নেয়াস্রের মাধ্যমে আত্মহাত্যার প্রবনতা পৃথীবির অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবিই কম। গোটা দুনিয়ার ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যাই মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ। ২০১২ সালের পরিসংখ্যান অন্তত সে রকমই বলছে।

এছাড়াও, বাংলাদেশ পুলিশের হিসাবে, প্রতিবছর ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে গড়ে ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করছেন৷ এর বাইরে আছে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়া, রেললাইনে ঝাঁপ দেয়া৷
তাদের হিসাবে, এর বাইরে দেশের বড় বড় হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে যত রোগী ভর্তি হয়, তার সর্বোচ্চ ২০ ভাগ আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া লোকজন৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ”হু” আত্মহত্যাকে  একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছে অনেক আগেই। তবে একই সঙ্গে তারা বলছে, ঠিক সময়ে হস্তক্ষেপ করে, ভালভাবে বুঝিয়ে এবং খুব কম খরচেই বেশির ভাগ আত্মহত্যা ঠেকানো সম্ভব।তবে এখানে অতীব গুরুতর ভূমিকা রাখে তাদের নিজেদের পরিবারগুলো।অধিকাংশ অত্মহত্যার দায় পরিবারের উপর ভর থাকে। দেশে দিন দিন বেড়েই চলছে আত্মহননের ঘটনা। আর্থিক দৈন্যতার কারণেই আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে বলে জরিপে এসেছে।
দেশের মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নেয়ার পেছনে আরো যেসব কারণ এসেছে তার মধ্যে রয়েছে পারিবারিক কলহ, সাংসারিক অশান্তি, পরীক্ষার ব্যর্থতা,পরকীয়াএবংমাদকাসক্তি।


তবে কেউ কেউ আত্মহত্যার জন্য ধর্মীয় চাপকে দায়ী করে থাকে। বাংলাদেশে এমন কারণে আত্মহত্যার পথ বেচে নেয় তা তেমন বাস্তবমুখি নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে আত্মহত্যা করে পারিবারিক, সামাজিক, পঞ্চায়েতের মনগড়া সিদ্ধান্ত, ও প্রেম ঘটিত কারণে। আবার এমন কিছু অঞ্চল আছে যেখানে আত্মহত্যার ঘটনা লিপিবদ্ধই করা হয় না। যেহেতু সব দেশের প্রকৃত হার জানা যায় না, তাই পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে জাতিভিত্তিক আত্মহত্যা হারের তুলনা বাঞ্ছনীয় নয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, নেপালে আত্মহত্যা আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ। তাই কেউ আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে কারাভোগ করতে হয় অথবা অর্থদণ্ড দিতে হয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই নেপালে আত্মহত্যার ঘটনা কম লিপিবদ্ধকরণ হয়ে থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার লোক আত্মহত্যা করেন, যাঁদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি৷ বয়সের হিসেবে তরুণ-তরুণীরাই বেশি আত্মঘাতী হচ্ছেন৷ তবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এরচেয়ে আরো ১০ গুণ বেশি মানুষ৷সামাজিক, পারিবারিক অথবা আপনজনকে বাচাতে গিয়ে জীবিত লাশ হয়ে বেচে আছে অসংখ্য মানুষ।তবে এ ক্ষেত্রে সবছেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বেকার যুবক-যুবতীরা। অনেক তরুণ তরুণী রয়েছে যারা শুধুমাত্র পিতা-মাতার দিকে তাকিয়ে এ পথে পা বাড়াই নি।  

বাংলাদেশে একটি আত্মহত্যার ঘটনা সংবাদমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব পায়৷ একজন মডেল আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্টের মাধ্যে সুইসাইড নোট দিয়েছিলেন৷ এমনকি ভিডিওতে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টাও দেখান৷ এরপরেই তিনি আত্মহত্যা করেন৷ বাংলাদেশে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এ ধরণের আত্মহত্যার ঘটনা তখন প্রথমই ছিলো। তবে ইদানিংকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে আত্মহত্যা করে এমন ঘটনা এখনকার জন্য রিতিমত হয়ে আছে। গত ১০ ই ডিসেম্বর চাঁদপুরে এক পরিবারে ৪ জন আত্মহ্ত্যার ভিডিও ভাইরাল হয়ে আছে। জানা গেছে ঐ পরিবারের মধ্যে অনেক দিন ধরেই মান অভিমান চলে এসছে। এমতাবস্থায় পিতা তার দুই শিশু সন্তার ও স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহ্ত্যা করেছে। আত্মহ্ত্যার আগে তিনি ফেসবুকে জানান দিয়ে গেছেন যে, তাদের হত্যার জন্য তাদের শশুর বাড়ির পরিবারের লোকজনই দায়ী।

ভারতের একটি হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকা পাখির জামার মতো জামা না পেয়ে অভিমানে বাংলাদেশে কিশোরী-তরুণীদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে গত প্রায় তিন বছর ধরে৷ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও সিরাজগঞ্জে পাখির মতো জামা না পেয়ে এক কিশোরী আত্মহত্যা করে৷
এর বাইরে নির্যাতন, ইভটিজিং বা যৌতুকের কারণেও নারীদের আত্মহত্যার খবর প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়৷তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী স্ত্রী খুটি নাটি বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ার কারণেই আত্মহত্যার প্রবনাত তৈরি হয়। এছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষা, বিশেষ করে এসএসি ও এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের সময় বা তার পর পরও আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষণীয়৷

প্রতিবছর দেশে গড়ে ১০ হাজার লোক আত্মহত্যা করে৷ প্রতি এক লাখে করেন ৭ দশমিক ৩ জন৷ বিভিন্ন বয়স, লিঙ্গ, পেশা এবং ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪২৯ জনের ওপর সরাসরি জরিপ চালিয়ে তারা এই তথ্য প্রকাশ করে৷ আর শহরের চেয়ে গ্রামে আত্মহত্যার হার ১৭ গুণ বেশি৷ গ্রামে যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের বড় অংশ অশিক্ষিত এবং দরিদ্র৷
জরিপে বলা হয়, নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি৷ এদের মধ্যে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সি নারীরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ৷ এছাড়া ২০১৪ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ২৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন৷

তাদের হিসেবে, ঐ বছর ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন ১০ হাজার ১২৯ জন৷ এদের মধ্যে একটা বড় অংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে৷
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মহত্যা করছেন ২১-৩০ বছর বয়সিরা৷ এর মধ্যেও নারীর সংখ্যা বেশি৷

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ আত্মহত্যার ৯৭০টি ঘটনা পর্যালোচনা করে নারীদের বেশি আত্মহত্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করেছে৷ তাদের মতে, বাংলাদেশে নারীদের ওপর শারীরিক, যৌন ও মানসিক নির্যাতন এবং ইভটিজিং-এর ঘটনা বাড়ায় অনেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে আত্মহত্যা করছেন৷ অবিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য হওয়া অথবা স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর গর্ভধারণের কারণে অনেকে আত্মহত্যা করেন৷ বেশির ভাগ নারী আত্মহত্যা করেছেন গলায় দড়ি দিয়ে আর পুরুষেরা কীটনাশক খেয়ে৷

২০১৩ সালে বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিক ‘প্রথম আলো' তাদের পত্রিকায় প্রকাশিত ২০টি আত্মহত্যার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে৷ তাতে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে নানা দিক উঠে এসেছে৷

কারণগুলো এরকম – যৌতুকের কারণে নারীরা আত্মহত্যা করেছেন, স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে সন্তানকে হত্যা করে আত্মঘাতী হয়েছেন মা৷ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছে৷ এছাড়া অন্তত দু'জন রোগের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন৷ একজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে, অন্যজন মতিঝিল এজিবি কলোনিতে শ্বাসকষ্ট সহ্য করতে না পেরে নিজের গলা কেটে ফেলেন৷ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পাওয়ায় নীলফামারীতে এক কিশোর আত্মহত্যা করে৷ ঐ বছর শুধু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিনই আত্মহত্যার চেষ্টা করা কমপক্ষে ২৭ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন, যাঁদের মধ্যে একজন মারা যান৷

গবেষনায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের  দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি৷ আত্মহত্যার চরম ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে ঝিনাইদহ পরিচিত৷ স্থানীয় পুলিশ ও হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহে ২০১০ সালে আত্মহত্যা করেছে ৩৮০ জন আর চেষ্টা করেছে ২১০৯ জন; ২০১১ সালে আত্মহত্যা করেছে ৩০৯ জন, চেষ্টা করেছে ২৮৪৯ জন; ২০১২ সালে আত্মহত্যা করেছে ২৯৫ জন, চেষ্টা করেছে ২৫৮৩ জন; ২০১৩ সালে আত্মহত্যা করেছে ৩১১ জন, চেষ্টা করেছে ২৬৩৯ জন; ২০১৪ সালে আত্মহত্যা করেছে ৩০৩ জন, আর চেষ্টা করেছে ২৪০৯ জন এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করেছে ৩৬৩ জন আর চেষ্টা করেছে ২৬০০ জনের ওপরে৷

ঝিনাইদহে প্রতিবছর গড়ে আত্মহত্যা করে ৩৫০ জন৷ আর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ৷ যাঁরা আত্মহত্যা করেন তাঁদের অধিকাংশই নারী৷
নারী নির্যাতন, পারবিারিক কলহ, সংসারে অশান্তি, অসুস্থতা, বাবা-মার ওপর অভিমান, প্রেম ঘটিত ব্যাপার, কৃষকের ঘরে কীটনাশকের সহজ লভ্যতা ও তুচ্ছ ঘটনায় আবেগ প্রবণ হয়ে এই জেলার মানুষ হরহামেশা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়৷

এছাড়াও বিশ্বস্বাস্থ সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি ৩৩ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করে। প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার জন আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ সফল হয়। এছাড়া প্রায় ৪০ লাখ টিনএজার প্রতিবছর আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং এক লাখ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যুদ্ধ, টেরোরিস্ট বা সন্ত্রাসী আক্রমণ কিংবা খুনের শিকার হয়েও আত্মহত্যার সমপরিমাণ মানুষ মারা যায় না।

সম্প্রতিককালে জানা গেছে, মুরগি বিক্রি করে সংসার চালান মনোয়ার হোসেন। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ভাড়া থাকেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। আগে সংসারে স্বচ্ছলতা ছিল। এখন নেই। একদিকে ব্যবসা মন্দা তার উপর তিন ছেলেই ব্যবসার টাকা চুরি করে। দিন শেষে যা লাভ হয় তার সিংহভাগই লুট হয়ে যায় তিন ছেলের হাতে। বড় ছেলে মাদকসেবি। অভাব অনটন নিয়ে সংসারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। মনের দুঃখে গত সপ্তাহে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। ফাঁসিতে ঝোলার কয়েক মিনিটের মধ্যে একজন এসে দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করায় বেঁচে যান। কী কারণে আত্মহত্যা করতে বসেছিলেন জানতে চাইলে মনোয়ার হোসেন উপরোক্ত কারণগুলো জানান।

ক্ষুদে ব্যবসায়ী মনোয়ার ভাগ্যগুণে বেঁচে গেলেও আত্মহত্যায় অনেকের জীবনই অকালে শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ১৪ আগস্ট রোববার রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে মৌসুমী আক্তার মৌ নামে এক তরুণী। এক বেসরকারি বিশ্বদ্যিালয়ের অনার্সের ছাত্রী মৌসুমী প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ১৯ জুন রোববার চট্টগ্রাম কোতয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকায় বাবা-মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নুরুন্নাহার আক্তার মুন্নি নামে এক তরুণী। পুলিশ ভাষ্যমতে, পারিবারিক বিষয় নিয়ে দুদিন আগে মুন্নীকে বকা দেয় বাবা-মা। এ ঘটনার জের ধরে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে মুন্নী।

একাধিক কন্যাসন্তান প্রসব করা, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে বেশি আত্মহত্যা করেন। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সালে যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার ৮৬ শতাংশ ঘটেছে পারিবারিক সহিংসতার কারণে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা শতকরা ৫ ভাগ বেড়েছে।
সারা পৃথিবীর যত মানুষ আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করে, তার মধ্যে ২.০৬ শতাংশ বাংলাদেশি। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রতি লাখে ১২৮.০৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতিবছর এই সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন ২৮ জন মানুষ আত্মহত্যা করে।

নবীনতর পূর্বতন